কামরুল হাসান হৃদয়: নিউ মডেল জনতা উচ্চ বিদ্যালয় ( এনএমজেইউএস ) অ্যালমনাই অ্যাসোসিয়েশনের পুনর্মিলনী অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার ( ৪মে ) বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে এ ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠিত হয়। ঈদ পরবর্তী এ মিলনমেলায় অংশ নেয় ২০০৫ব্যাচ থেকে ২০২১ব্যাচ পর্যন্ত প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা। প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের স্বতঃস্ফুর্ত অংশগ্রহণে প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে মিলনমেলাটি।
প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও স্বনামধন্য প্রশিক্ষক শিশির মাহমুদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রতিষ্ঠাতা প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক সাহাব উদ্দিন এবং সভাপতিত্ব করেন দাতা আবদুল মালেক। এ ছাড়াও বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন; প্রতিষ্ঠানের প্রাক্তন শিক্ষক আবদুল মালেক সৌরভ, ওমর ফারুক, সাইফুল ইসলাম মুরাদ, আবদুল মজিদ, খোরশেদ আলম ইথন ও বর্তমান প্রধান শিক্ষক মোঃ সেলিম এবং সহকারি শিক্ষক সফিক উল্লাহ।
দিনব্যাপী এ অনুষ্ঠানের আয়োজনসূচী অনুযায়ী কোরান তেলাওয়াতের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয় এবং এবং শুরুতে স্বাগত বক্তব্য দেন প্রাক্তন শিক্ষার্থী কামরুল হাসান। অনুষ্ঠানে নিজেদের পরিচয় এবং বিদ্যালয় নিয়ে স্মৃতিচারণমূলক কথা বলেন বিগত ১৭বছরের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা।
প্রথম ব্যাচের শিক্ষার্থী নাসির হোসেন বলেন; বিদ্যালয়টি ২০০৪সালে প্রতিষ্ঠা হলেও আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম ২০০৫সাল থেকে শুরু হয় এবং শুরুতে চারজন শিক্ষার্থী নিয়ে যাত্রা শুরু করে প্রতিষ্ঠানটি পরবর্তীতে আমার ব্যাচম্যাটরা অন্যত্র চলে যাওয়ায় আমাকে একা – একা পুরো বছর পড়তে হয়েছে।
এ বিদ্যালয়ের ঘর তৈরিতে আমি নিজ হাতে কাজ করেছি যা এখনো মনে পড়ে এবং চোখের কোণে জল জমে।
প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও শিক্ষক সাইফুল ইসলাম মুরাদ স্মৃতিকাতর হয়ে বলেন; এ বিদ্যালয়টি আমার জীবনের স্বরণীয় বিদ্যালয় এবং জীবনের টার্নিং দুটো পয়েন্ট। যখন অর্থাভাবে পড়াশুনা বন্ধ হবার উপক্রম হয়েছিলো ষষ্ঠ শ্রেণিতে তখন বিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী এক মামার শরাপন্ন হই এবং তিনিই আমাকে এ বিদ্যালয়ে নিয়ে আসেন এবং প্রধানশিক্ষকের সাথে পরিচয় করিয়ে দেন এবং আমি বিনা বেতনে অধ্যয়নের সুযোগ পাই। দ্বিতীয় সুযোগটা এ প্রতিষ্ঠানটি দিয়েছিলো, যখন আমি ইন্টারমিডিয়েট শেষ করি তখন ভার্সিটি কোচিং করেও হতাশাগ্রস্থ তখন এ প্রতিষ্ঠানে চাকরি পাই, যা ছিলো আমার জন্য প্লাস পয়েন্ট। এ প্রতিষ্ঠানে পড়াশুনার সুযোগ পেয়েছি বলেই আজ আমি জীবনের মোড় ঘুরিয়ে সরকারি চাকরি করছি।
আরেক প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও সাংবাদিক কামরুল হাসান হৃদয় বলেন: এ প্রতিষ্ঠানটি আমার জীবনের সেরা প্রতিষ্ঠান যে প্রতিষ্ঠানে পড়েছি বলেই আজ আমি এতদূর। এ প্রতিষ্ঠানের এক ঝাঁক তরুণ শিক্ষার্থী বন্ধুসুলভ আচরণে অত্যন্ত যত্নে শিক্ষার্থীদের পড়ান। এবং শ্রেণিভিত্তিক কম শিক্ষার্থী হওয়ার খুব সহজে পড়াগুলো আয়ত্ত করা যায়। এ প্রতিষ্ঠানে পড়ে তৎপরবর্তী যত প্রতিষ্ঠানে গিয়েছি কো – কারিকুলার অ্যাক্টিভিস্টিজের কারণে বাহবারসহিত শুনেছি তোমার পূর্ববর্তী বিদ্যালয়টি নিশ্চয়ই ভালো ছিলো। পড়াশুনা এবং মেধাবী শিক্ষার্থী তৈরিতে এ প্রতিষ্ঠানটি সুনামের দাবিদার হয়েছে সর্বক্ষেত্রেই। যেখানেই যাই আমাদের অগ্রজ – আমরা এবং অনুজদের ভালো পারফরমেন্সের কথা শুনি। যা ভালো লাগার অনুভূতি তৈরি করে।
অনুষ্ঠানে বিরতির পর সালাত কায়েম শেষে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও রাফেল ড্র অনুষ্ঠিত হয়; এবং নতুন অ্যালমনাই অ্যাসোশিয়নের আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়। কমিটি ঘোষণা করেন প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক ও প্রধান অতিথি সাহাব উদ্দিন। কমিটিতে সভাপতি: খোরশদ আলম ইথন, সাধারন সম্পাদক: আরিফ খাঁন ছোটন, সাংগঠনিক সম্পাদক: আরিফ হোসেন এবং অর্থ সম্পাদক: কামরুল হাসান।
প্রাক্তন শিক্ষার্থী এবং আয়োজক, আরিফ খাঁন ছোটন অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করেন এবং এরপর ভূরিভোজ এবং ফটোশেসনের মাধ্যমে পুনর্মিলনীর দিনব্যাপী কার্যক্রম শেষ হয়।