নিজস্ব প্রতিনিধি: লক্ষ্মীপুরে প্রতিবেশি স্কুল শিক্ষকের বাড়ির নিরাপত্তা দেয়াল ভেঙে লুটের ঘটনায় আসামি রেদোয়ান ভূঁইয়া রানাকে ১৫ দিনের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার (১৭ নভেম্বর) দুপুরে লক্ষ্মীপুর জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট বিচারিক আদালতের বিচারক আনোয়ারুল কবির এ রায় দেন।
রাতে বাদীর আইনজীবী কামরুল হাসান রনি বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, আসামি রানার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আদালত তাকে ১৫ দিনের সাজা দিয়েছে। আপিল শর্তে তার জামিন আবেদন করা হলেও আদালত তা খারিজ করে দেয়। এ মামলার অপর দুই আসামিকে আদালত খালাস দিয়েছেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত রানা লক্ষ্মীপুর পৌরসভার বাঞ্চানগর এলাকার সুজায়েত ভূঁইয়ার ছেলে ও চট্টগ্রাম-লক্ষ্মীপুর রুটে চলাচলকারী শাহী বাস টিকেট কাউন্টারের কর্মচারী।
খালাস পেয়েছেন রানার ছেলে মারুফ ভূঁইয়া ও ভগ্নিপতি আবুল বাশার।
আদালত সূত্র জানায়, মনোয়ারা বেগম বাঞ্চানগর এলাকার তোফায়েল আহম্মেদের স্ত্রী ও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অবসারপ্রাপ্ত সহকারী শিক্ষক। তাদের সঙ্গে আসামিদের জমি নিয়ে বিরোধ ছিল। ২০১৯ সালের ২৪ অক্টোবর ভাইয়ের অসুস্থের খবর শুনে মনোয়ারা বরিশাল যায়। এরমধ্যে সবার অনুপস্থিতিতে আসামিরা ২৬ অক্টোবর তার বাড়ির নিরাপত্তা দেয়াল (উত্তর-পূর্ব পাশ) ও গেইট ভেঙে ইটগুলো লুট করে নিয়ে যায়। এতে তার ১ লাখ ২০ হাজার টাকার ক্ষতি এবং বাড়ির গাছের ১০ হাজার টাকার নারিকেল ও সুপারি নিয়ে যায় আসামিরা। বাড়িতে এসে ঘটনাটি দেখতে পেয়ে বাদী সদর মডেল থানা পুলিশকে অবহিত করে।
এদিকে ৩১ অক্টোবর ভাইয়ের মৃত্যুর খবর পেয়ে ফের তিনি বরিশাল যান। পরদিন আসামিরা ফের মনোয়ার বাড়ির দক্ষিণ-পূর্ব পাশের নিরাপত্তা দেয়াল ভেঙে ইটগুলো লুট করে নেয়। এইদিন তার ১ লাখ ৫০ হাজার টাকার ক্ষতি হয়। এসব ঘটনায় ২৩ নভেম্বর সদর মডেল থানায় মনোয়ারা বাদী হয়ে রানাসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। ২০২০ সালের ২৭ জানুয়ারি মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। শুনানি ও সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত আসামি রানাকে ১৫ দিনের কারাদণ্ড দেয়।
বাদী মনোয়ারা বেগম বলেন, প্রথম ঘটনার দিন আসামিরা বেড়া দিয়ে আমাদের পুকুরে যাওয়ার পথ বন্ধ করে দেয়৷ এসবের প্রতিবাদ করায় তারা আমাদের হত্যার হুমকিও দিয়েছিল। আমরা আদালতের রায়ে সন্তুষ্ট।
প্রসঙ্গত, গত ২১ সেপ্টেম্বর চলাচলের রাস্তায় টিনের বেড়া দিয়ে প্রতিবন্দী স্কুলছাত্রের পরিবারসহ ৩ পরিবারকে অবরুদ্ধ করে রাখে রেদোয়ান রানা। বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলে ২৩ সেপ্টেম্বর লক্ষ্মীপুর পৌরসভার মেয়র মোজাম্মেল হায়দার মাসুম ভূঁইয়া ঘটনাস্থল গিয়ে টিনের বেড়া সরিয়ে দেয়।