স্টাফ রিপোর্টার: বিভিন্নভাবে হয়রানি, হুমকি, হামলা ও মামলার ভয়ে আতংকিত এলাকার সাধারন মানুষ। গ্রামের সাধারন মানুষের সরলতার সুযোগে করছেন প্রতারনা। অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্য হওয়ায় তার পক্ষে সবই সম্ভব। মিথ্যা মামলায় হয়রানির ভয়েও অনেকই প্রতিবাদ করছেন না। এলাকায় এমন অসুস্থ প্রভাব খাটাচ্ছেন কামরুল হাসান ফিরোজ নামের এ সাবেক পুুলিশ সদস্য। বর্তমানে তার দুই ছেলেও পুলিশ সদস্য হওয়ায় তার খামখেয়ালিপনা আরো বেড়ে গেছে। কামরুল হাসান ফিরোজের পরিবারের হয়রানি থেকে তাই তো রক্ষা চায় লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার পার্বতীনগর ইউনিয়নের ওয়াহেদপুর গ্রামের বাসিন্দারা। এছাড়া হয়রানি, হামলা সহ তার অপকর্মের বিচারও চায় এলাকাবাসী। তাই তো গত শুক্রবার (২৬ আগষ্ট) ফিরোজের বিচারের দাবিতে এলাকাবাসী মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন। সকালে জকসিন-পোদ্দার বাজার সড়কে ঘন্টাব্যাপি এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন তারা। এতে অর্ধশতাধিক ভোক্তভোগি অংশগ্রহন করেন। পরে তারা বিক্ষোভ করে ফিরোজের বিচার ও শাস্তি কামনা করেন।
অভিযুক্ত কামরুল হাসান ফিরোজ ওয়াহেদপুর গ্রামের ধায় মিঝি বাড়ির মৃত আবু সিদ্দিকের ছেলে ও ২বছর আগে পুলিশ থেকে অবসরে যান।
অভিযোগ করে কৃষক দিদার হোসেন কালু বলেন, ফিরোজ আমাকে তার জমিতে চাষাবাদ ও পুকুরে মাছ চাষ করতে বলে। আমি নিজ খরচে চাষাবাদ সহ মাছ চাষ করি। ফসলাধি উপযোগি হওয়ার পর আমাকে সেখান থেকে বের করে দেয় এবং পুকুরে সব মাছ নিয়ে যায়। আমি প্রতিবাদ করলে হুমকি ধমকি প্রদান করে। এছাড়া আমাকে ৩টি মামলা দিয়ে হয়রানি করছে।
প্রবাসী এমদাদুল হক বলেন, আমাদের কাছ থেকে জমি ক্রয়ের নামে বায়না করেই জোর করে জমি দখলে নিয়ে যায়। এছাড়া আমাদের জমির গাছগাছালি কেটে পেলে। বাধা দিলে হুমকি ধমকি ধমকি সহ মামলার ভয় দেখাচ্ছে। আমরা এর বিচার চাই।
মিরিকপুর বাজারের ব্যবসায়ী নুর নবী বলেন, আমার ছেলেকে নিয়ে আমি দীর্ঘদিন ঢাকায় হাসপাতালে ভর্তি ছিলাম। এ সুযোগে কামরুল হাসান ফিরোজ আমার দোকান লুট করে টিভি, ফ্রিজ সহ সকল মালামাল নিয়ে যায়। সে প্রভাবশালী হওয়ায় আমি এর কোন প্রতিকার পায় নি।
মোঃ আক্তারুজ্জামান অভিযোগ করে বলেন, পূর্ব বিরোধের জের ধরে গত ২৩জুলাই কামরুল হাসান ফিরোজ দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে আমার ও আমার পরিবরের উপর হামলা চালায়। এতে আমি ও আমার স্ত্রী সহ কয়েকজন আহত হই। এ ঘটনায় কামরুল হাসান ফিরোজ সহ তার ছেলে নাবিল আহম্মদম তাওহিদ আহম্মদের নামে আদালতে মামলা করি। যা চলমান রয়েছে।
আতাউর রহমান বলেন, জমি সংক্রান্ত বিরোধ থাকা সত্বেও কামরুল হাসান ফিরোজ আমাদের জমি থেকে গাছগাছালি কেটে নেয়। আমি বাধা দিলে আমার উপর ক্ষিপ্ত হয়। পরে জনপ্রতিনিধিদের জানালে উভয়পক্ষকে নিয়ে বৈঠকের সিদ্ধান্ত হলে কামরুল হাসান ফিরোজ চলে যায়। কিন্তু বৈঠক তো দূরের কথা গত ১৯মে আমাকে মেরে পেলার উদ্দেশ্যে রাতে অন্ধকারে অতর্কিত হামলা চালায়। এতে গুরুতর আহত হই। পরে আমার চিৎকার শুনে আশে পাশের লোকজন এগিয়ে আসলে ফিরোজ ও তার লোকজন পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় আমি আদালতে মামলা দায়ের করি, যার ওয়ারেন্ট হয়ে বর্তমানে সে জেল হাজতে রয়েছে।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল ওয়াহেদ বলেন, আমি কিছু অভিযোগ শুনেছি। তিনি অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্য হওয়ায় এলাকার কাউকে মানুষ মনে করেন না। তাই তো এমন অসুস্থ আচরন করছেন। একটি বিষয়ে আমি গ্রাম পুলিশ পাঠালে তিনি গ্রাম পুলিশের সাথে ভালো আচরন করেন নি।
অভিযুক্ত কামরুল হাসান ফিরোজ কারাগারে থাকায় অভিযোগের বিষয়ে তার বক্তব্য জানা যায় নি।